শিক্ষার লক্ষ্য ও পাঠ্যক্রম
পাঠ্যক্রম: আমাদের পাঠ্যক্রমটি দেশের শিক্ষার মান ও ইসলামী শিক্ষার সমন্বয়ের পাশাপাশি অতিরিক্ত কারিকুলাম হিসেবে আরবী ভাষা শিক্ষা, ইংরেজী ভাষা শিক্ষা, হাতে-কলমে কৃষি প্রশিক্ষণ ও আধুনিক শিক্ষার লক্ষ্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি কোরআনুল কারীমের হিফ্জ বাধ্যতা মূলক। এছাড়াও হিফ্জ বিভাগে হিফজুল কোরআনের পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজী, আরবী ইত্যাদি ভাষা শিক্ষা সহ হাতে-কলমে কৃষি শিক্ষা ও আধুনিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
শিক্ষার উদ্দেশ্য: দক্ষ হাফিজ ও একজন দ্বীনের দায়ী হিসেবে তৈরির লক্ষ্যে কোরআন-সুন্নাহর সঠিক জ্ঞানার্জন এবং ছাত্রদের মানসিক, সামাজিক, ও একাডেমিক দক্ষতা বৃদ্ধি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
১। সালাতে নিয়ম মেনে চলা: প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা এবং বিশেষভাবে জামাতের সহিত সালাত আদায় করা।
২। শিক্ষার প্রতি নিষ্ঠা: নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ করা এবং পড়াশোনা ও হিফ্জের জন্য নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সময় দেওয়া। প্রতিদিনের পাঠ প্রতিদিনই সম্পন্ন করা।
৩। শিক্ষকদের সাথে আচরণ: সর্বদা শিক্ষকদের প্রতি অনুগত থাকা, সম্মানের সহিত কথা বলা ও বেয়াদবি না করা এবং শিক্ষকগণের উপদেশ মেনে চলা।
৪। পোষাক পরিচ্ছদ: মাদ্সার পোষাক বিধান মেনে চলা (সাদা রংয়ের জালি টুপি, অলিভ রংয়ের জুব্বা, ও পায়জামা)। মাদ্সার ক্লাস চলাকালীন সময়ে নির্ধারিত পোষাক ছাড়া কোন অবস্থাতেই প্রবেশ করা যাবেনা।
৫। পরিচ্ছন্নতা: ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা (গোসল করা, মেসওয়াক করা, হাত-পায়ের নখ কাটা, চুল কাটা, দাঁড়ি ছোট না করা, পাঞ্জাবী ও পায়জামা নিয়মিত ধৌত করা এবং প্রত্যেক ৪০ দিনের অভ্যন্তরে শরীরের অবাঞ্চিত লোম পরিষ্কার করা) বজায় রাখা এবং মাদ্রাসার পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সহযোগিতা করা।
৬। শৃঙ্খলা: নিয়মিত সময়-শৃঙ্খলা মেনে চলা এবং অনিয়মিত আচরণ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করা। মাসজিদের অভ্যন্তরে কোনরূপ হট্টগোল না করা এবং মাসজিদের আদব মেনে চলা। উল্লেখ্য মাসজিদের দেয়াল, সিড়ির দেয়াল, ক্লাশের টেবিল ইত্যাদিতে কোনরূপ আঁকাআঁকি না করা। মাসজিদ ও নিজের প্রতিটি জিনিসের প্রতি যত্নবান হওয়া।
বি: দ্র: কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনক্রমের মাদ্রাসার নির্দিষ্ট এরিয়ার বাহিরে না যাওয়া।
৭। আচরণবিধি: মাদ্রাসার শৃঙ্খলা ও ভাল আচরণ বজায় রাখতে হবে। ভদ্র আচরণ, নিয়ম মানা এবং সহপাঠীদের প্রতি সম্মান দেখানো আবশ্যক।
৮। অপব্যয় ও অহেতুক কথাবার্তা: অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা, সময় নষ্ট এবং অপব্যয় (খাবার নষ্ট, পানির অপচয়, টয়লেট টিস্যু অতিরিক্ত খরচ, টয়লেটের সাবান নষ্ট, অতিরিক্ত টাকা খরচ) এড়িয়ে চলা।
৯। সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখা: সহপাঠীদের সঙ্গে সম্মানজনক ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখা এবংএকে অন্যের সাথে শত্রুতা পোষন না করা। কোন প্রকার মারামারি, কথা কাটা-কাটি না করা।
১০। ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস: প্রযুক্তি ব্যবহার সংক্রান্ত বিধি অনুসরণ করা, যেমন: টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পুর্ণ নিষেধ। এছাড়াও অন্যান্য ক্ষতিকারক বস্তু যেমন: চাকু, রডসহ দেশীয় আইনের পরিপন্থী কোন ধরণের অস্ত্র রাখা যাবেনা।
১১। ছুটি: মাদ্রাসার নির্ধারিত ছুটির ব্যতিরেকে আবাসিক ছাত্রদের ক্ষেত্রে মাসে ২দিন ছুটি নিতে পারবে। জরুরী ক্ষেত্রে দরখাস্তের মাধ্যমে ছুটি মঞ্জর করে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে মাদ্রাসায় উপস্থিত হতে হবে। নির্ধারিত তারিখের পরে মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে মাদ্রাসার নিয়ম অনুযায়ী জরিমানা প্রযোজ্য হবে।
১২। ফোনে কথা বলা: রুটিন অনুযায়ী প্রত্যাহ আসর সালাতের পর থেকে মাগরীব সালাতের পূর্ব পর্যন্ত অভিভাবকগণের সাথে কথা বলা যাবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই সিসিটিভি ক্যামেরার সামনে থেকে কথা বলতে হবে এবং কোন অবস্থাতেই ক্লাস চলাকালীন সময়ে ফোনে কথা বলার আব্দার করা যাবে না।
১ ৩। ছাত্র রাজনীতি: কোন প্রকার ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা যাবেনা।
১৪। শাস্তি: উপরোক্ত কোন আইন কানুন অমান্য করলে মাসজিদ ওমর এন্ড অলিভ ট্রি কোরআন একাডেমীর রুলস্ অনুযায়ী যথোচিত শাস্তি অথবা বহিষ্কার করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে অভিভাবকের কোন প্রকার সুপারিশ/আপত্তি গ্রহণ করা হবে না ।
অভিভাবক নির্দেশিকা ও অবগতি
১। পাঠদান ও উপস্থিতি: ছাত্রদের প্রতিদিনের ক্লাশে উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনুপস্থিতি বা দেরির জন্য সঠিক কারণ উল্লেখ করে দরখাস্ত দিতে হবে।
২। ড্রেস কোড: মাদ্রাসার নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিধান করার বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখা। বিশেষ কারণ ছাড়া ইউনিফর্ম ব্যাতিত মাদ্রাসায়/শ্রেণী কক্ষে প্রবেশের বাধ্য-বাধকতা মানতে হবে।
৩। অভিভাবক সমাবেশ
সময়সূচি: ত্রৈমাসিক একটি করে অভিভাবক মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। সময়সূচি মাদ্রাসা ওয়েবসাইট/নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করা হবে।
সমাবেশের উদ্দেশ্য: শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি ও শিক্ষার মানোন্নয়নের পর্যালোচনা, সমস্যার সমাধান এবং অভিভাবকদের মতামত গ্রহণ করা।
৪। ছাত্রদের মূল্যায়ন পদ্ধতি
পরীক্ষার সময়সূচি: প্রতি শিক্ষাবর্ষে ২টি সেমিস্টার ও ১টি বার্ষিক পরীক্ষা (মৌখিক ও লিখিত) অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার সময়সূচি পরীক্ষার পূর্বে ওয়েবসাইট/নোটিশ বোর্ডে জানানো হবে।
গ্রেডিং সিস্টেম:
A+ | A | A- | B | C | D | F |
80-100 | 70-79 | 60-69 | 50-59 | 46-49 | 40-45 | 01-39 |
৫। স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা
স্বাস্থ্য পরীক্ষা: জরুরি পরিস্থিতিতে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে মাদ্রাসার নিকতস্থ্য সরকারী সদর হাসপাতালে প্রেরণ ও প্রয়োজনীয় উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
নিরাপত্তা: মাদ্রাসাটি সার্বক্ষনিক সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। এছাড়াও সব ধরনের জরুরি পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় যোগাযোগের নম্বর প্রদান করা হয়েছে।
৬। মাদ্রাসার কার্যক্রম ও ইভেন্টস
মাদ্রাসার ইভেন্টস: বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এবং বিজ্ঞান মেলা, ফুড ফ্যাস্টিভ্যাল, মৌসুমি ফল উৎসবের আয়োজন করা হয়।
৭। বেতন ও অর্থনৈতিক সহায়তা
প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে নির্ধারিত মাসিক বেতন প্রদান করতে হবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষার ফি পরিশোধ করতে হবে। কোন কারণবশত নির্ধারিত সময়ে বেতন পরিশোধের ক্ষেত্রে বিলম্বিত হলে অবশ্যই মাদ্রাসার অফিস কক্ষে যোগাযোগ করতে হবে।
৮। স্পন্সরশীপ
গরীব, মেধাবী, আখলাক-আচরণ ও মাদ্রাসার নিয়ম-কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং প্রতিটি পরীক্ষায় গড় মার্ক ৬০% এর অধিক হলে ঐ শিক্ষার্থীকে স্পন্সরশীপ দেয়া হবে। উল্লেখ্য কোন ক্ষেত্রে উপরোক্ত নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটলে উক্ত ছাত্রের স্পন্সরশীপ বাতিল বলে গণ্য হবে।
৯। স্কলারশীপ
মাসজিদ ওমর এন্ড অলিভ ট্রি কোরআন একাডেমির শিক্ষা শেষে গরীব, মেধাবী ও পরীক্ষায় সর্বোচ্চ মার্কের অধিকারী শিক্ষার্থীকে পরবর্তী শিক্ষা অর্জনের জন্য বাংলাদেশের সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দেশের বাহিরে সুনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণের জন্য স্কলারশীপের ব্যবস্থা রয়েছে।
১০। অভিভাবকগণের সাক্ষাতের সময়
প্রত্যাহ আসর সালাতের পর থেকে মাগরীব সালাতের পূর্ব পর্যন্ত অভিভাবকগণ ছাত্রদের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। উল্লেখ্য ক্লাশ চলাকালীন সময়ে কোন অবস্থায় ছাত্রদের সাথে সাক্ষাৎ করা যাবেনা। তবে অফিস চলাকালীন সময়ে কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করা যাবে।
১১। ছাত্রদের সাথে ফোনে কথা বলার সময়
রুটিন অনুযায়ী প্রত্যাহ আসর সালাতের পর থেকে মাগরীব সালাতের পূর্ব পর্যন্ত অভিভাবকগণ মাদ্রাসার অফিসের নির্ধারিত ফোন/মোবাইল নম্বরে ছাত্রদের সাথে কথা বলা যাবে। কোন অবস্থায় শিক্ষকগণের ব্যক্তিগত ফোন/মোবাইলে কল করা যাবেনা।
১২। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে ফোন করার সময়
মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষের সাথে ফোন/মোবাইলে যোগাযোগ করার সময় প্রত্যাহ সকাল ০৯:০০ থেকে রাত ০৯:০০ পর্যন্ত। উল্লেখ্য জরুরী প্রয়োজনে প্রিন্সিপাল মহোদয়ের ফোন/মোবাইলে কথা বলা যাবে।
১৩। ছুটি কালীন সময়ে বাড়িতে করণীয়:
১৪। অভিভাবক হিসেবে ভূমিকা
যোগাযোগ: নিয়মিত মাদ্রাসারর কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখুন। আপনার সন্তানের পড়াশোনার অগ্রগতি সম্পর্কে আপডেট রাখুন।
সহযোগিতা: শিক্ষার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করুন। বাসায় পড়াশোনায় সাহায্য করুন এবং সৃজনশীল কার্যক্রমে উৎসাহিত করুন।